হযরত বিলাল (রা:)কিভাবে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন? সকল মুসলিমের জানা উচিৎ
হযরত বিলাল (রা:)কিভাবে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন? সকল মুসলিমের জানা উচিৎ

হযরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর ইসলাম গ্রহণের ঘটনা হযরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু তা’আলা জন্ম নেন সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরীতে জাতিতে তিনি একজন পিতার নামঃ বাবা আর মায়ের নাম হামামা তার পিতা একজন ক্রীতদাস হলেও মাহমুদ ছিলেন শাহাজাদী শাহাজাদী কেমন করে গোলামের স্ত্রী হলে সেটা জানতে হলে আমাদেরকে একটু পেছন ফিরে যেতে হবে মধুর আযানের ধ্বনিতে সমগ্র ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের হৃদয় আকুল হয়ে যে মানুষটি সর্বপ্রথম এই পবিত্র আযান কন্ঠে ধারণ করেছিলেন তার নাম হযরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন আজ আমরা তার জীবনকাহিনী জানবো জানবো ইসলামের জন্য আমৃত্যু লড়াই করে যাওয়া এক সাহসী যোদ্ধার কথা শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ জন্মগ্রহণ করেছিলেন ৫৭০ খ্রীষ্টাব্দে সেই বছরই আবিসিনিয়ার বাচ্চা আব্রাহা তার বিরাট হস্তী বাহিনী নিয়ে পবিত্র মক্কা নগরী আক্রমণ করে হস্তি বাহিনীর ভয়ে ভয়ে আতঙ্কিত.।
আল্লাহর ঘর রক্ষার ব্যবস্থা করলেন আল্লাহ তায়ালা নিজেই হস্তী বাহিনীর সহ আব্রাহা পরাস্ত হলো এই ঘটনার কথা মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কোরআন শরীফে সুরা ফিলে উল্লেখ করা আছে আর বিপিন শব্দের অর্থ হলো হাতি যুদ্ধে পরাজিত হয়ে আব্রাহার সমস্ত বাহিনী পালিয়ে গেল যারা পালাতে পারলো না তারা আরবদের হাতে বন্দী হতো এই বন্দীদের ইয়াদুল ফিল্ম বিলাল রাদিআল্লাহু তাড়ানোর মা হাম মা হাম মা ছিলেন স্বয়ং বাদশাহো আব্রাহার ভাতিজি কিন্তু ভাগ্যের ফেরে হলেন রাশি সম্বন্ধে কুরাইশ বংশের একটি ঘরে তার স্থান হল বাদী হিসেবে সেখানেই আবিসিনিয়ার আরেকদফা কাজ করতো তাদের বিয়ে হয় এবং তাদের ঘরেই জন্ম নেয় ইসলামের একনিষ্ঠ কান্ডারী হযরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হযরত বিলাল রাদিআল্লাহু তাড়ানোর চেহারা মোবারক এর বর্ণনা পাওয়া যায় একজন ১১২ হিসেবে তার গায়ের রঙ ছিল কালো দেহের গঠন ছিল লম্বা মাথায় ঘন কালো চুল.।
লাল কিতাব ব্যবহার করতেন বাবা মায়ের স্নেহের ছায়ায় শিশু বিড়াল তিনি বড় হচ্ছিলেন হঠাৎ করেই বিড়ালকে এতিম করে তার মা-বাবা পাড়ি জমান না ফেরার দেশে এর আগে বিড়ালকে রেখে দেন মনিশ কালকের কাছে একজন ক্রীতদাসের ছেলে হিসেবে তাকেও ক্রীতদাস হতে হলো কিভাবে চলছিলেন একদিন মারা গেলেন খালা বললেন খালুর পত্র ওমাইয়া ওমাইয়া ছিলেন নির্মম বিড়ালের উপর নেমে আসলো এক অকথ্য নির্যাতন কিশোরী লালের কাছে এতোটুকু ভুলত্রুটি পেলেই তাকে অমানবিক নির্যাতন চালাতে উমাইয়া জুলুম আর অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেল আমারও তাই মত একজন হতভাগ্য ক্রীতদাস আমার পরে নবী সাঃ সাহাবাদের একজন হয়ে ওঠেন এবং তার হাতে স্থাপিত হয় ইসলামের প্রথম মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর আমার কাছে বিলাল রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু শুনলেন মহানবী সাঃ এর নাম দুজনে সিদ্ধান্ত নিলেন ইসলাম গ্রহণ করবেন একসময় সেটি করে ফেললেন বিড়ালের আল্লাহ.।
নুর ইসলাম গ্রহণের খবর আর চাপা রইলোনা ঘুমায় এবার হাজারগুন ক্ষিপ্ত হলেন বিল্লাল এর উপরে অত্যাচারের মাত্রা আরো চরমে পৌঁছে তাকে বলা হল জন্তুর মত চলাফেরা করার জন্য আদেশ অমান্য করলে শাস্তি কখনো বিড়ালের গলায় দড়ি বেঁধে ছেলেদের হাতে তুলে দেন ছেলেরা থেকে মক্কার রাস্তায় টেনেহিঁচড়ে যেখানে সেখানে নিয়ে যায় অজ্ঞান হয়ে যায় বিলাল উমাইয়া বেলালকে লোকদেখানো ইসলাম ত্যাগ করলেই উঠিয়ে নেবেন শাস্তি নতুবা মাত্রা আরও বাড়বে কিন্তু বিড়াল তার আদর্শ থেকে সরে না প্রাণের চেয়েও যে আদর্শ বড় ফলাফলে আরো ক্ষেপে যান উমাইয়া নির্যাতন ক্রমে বেড়েই চললো এবার বিড়ালের বুকে ভারী পাথর চাপিয়ে তাকে মরুভূমির অগ্নি তত্ত্ব বালের উপরে চিৎ করে শুইয়ে রাখা হল বন্ধ করা হল খাবার চাবুকের আঘাতে আঘাতে তাকে জর্জরিত করা হতো ক্ষতবিক্ষত দেহে ছড়িয়ে দেয়া হলো লবণ কখনোবা চুবিয়ে রাখা হলো পানিতে.।
যন্ত্রণায় কাতর হয়েও নিজের আদর্শ কে অস্বীকার করলেন না একটিবারের জন্যেও মনে মনে শুধু আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন একদিন নিশ্চয়ই এই যন্ত্রণার অবসান হবে বিড়ালের উপরে এই ভয়ঙ্কর নির্যাতনের খবর গেল নবীজী সাঃ এর কাঁদছো কেঁদে উঠলো তার অন্তর ভাবতে লাগলেন যে কি করা যায় সাহাবীদের সাথে আলোচনা করলেন হযরত আবু বক্কর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু নবীজিকে বললেন যেমন করেই হোক আমি হযরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু কে মুক্ত করে আনবো ইনশাল্লাহ যত টাকা লাগে লাগুক আবুবকর গেলেন হুমায়ুন কাছে কিন্তু উমাইয়া জানতেন আবু বকর ইসলাম গ্রহণ করেছেন তিনি বুঝতে পারলেন আবু বকর বিড়ালকে ক্রয় করে মুক্ত করে দেবেন তাই তিনি আবু বকরের প্রস্তাবে রাজি হলেন না হতাশ মনে ফিরে এলেন আবু বক্কর এবার এগিয়ে এলেন নবীর চাচা হযরত আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু তিনি বলেন আমিতো এখন ইসলাম গ্রহণ করেনি তাই ও মাইয়া আমার কাছে.।
বিড়ালকে বিক্রি করতেও পারে আর হল তাই ঘুমাইয়ে রাজি হলো তবে অর্থ নয় তাকে গোলামের বোতলে গোলাম দিতে হবে তাই সে পেল এই প্রথম মুক্তির স্বাদ পেলেন বেলাল রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবন একেবারে বদলে গেল নতুন করে বিলাল রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু ইসলাম গ্রহণ করেন তৎকালীন ইসলাম অনুসারে শংখ্যাছিল হাতেগোনা দশ-বারোজন প্রায়ই আক্রমণ চৌত তাদের উপরে নবীজী সাঃ আদেশ দিলেন আবিসিনিয়ায় হিজরত এর সবাই বিড়ালকে অনুরোধ করলো তাদের সাথে যাওয়ার জন্য কিন্তু প্রাণের নবী কে ছেড়ে বিলাল কোথাও এলেন না এর কিছুদিন পর নবীর আদর্শের বাধ্য হয়ে মদিনায় হিজরত করেন কিছুদিন পরের কথা নবীজী সাঃ মদীনায় সফরে গেলেন নামাজ পড়ার জন্য মসজিদ তৈরি হলো কিন্তু সমস্যা দেখা দিল লোকজনকে একত্রিত করা নিয়ে কি করা যায় তাই নিয়ে ভাবতে লাগলাম সবাই একদিন নবীজির আরেক জনপ্রিয় সাহাবা আব্দুল্লাহ.।
রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু স্বপ্নাদেশের মাধ্যমে আযানের কথাগুলো শুনবেন নবীজিকে শোনাতেই তার পছন্দ হলো তিনি আব্দুল্লাহ বিন যিয়াদকে আদেশ দিলেন বিল্লাল রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু কে কথাগুলো শিখিয়ে দেয়ার জন্য বিলাল রাদিআল্লাহু তাড়ানোর কণ্ঠস্বর অত্যন্ত সুরেলা ও মিষ্টি হয় নবীজী সাঃ বললেন দিলেই হবে ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন তারপর থেকে রাজধানী আল্লাহর দরবারে হাজির আদিত্য সকল ধর্মপ্রাণ মুসলিম তারা জানে এমন এক অদ্ভুত পবিত্রতায় ছেয়ে যেতো বিড়ালের আল্লাহ তা’আলা আনহু ইসলামের প্রতি তার ভালোবাসা ত্যাগ আর নিষ্ঠুর পুরস্কারস্বরূপ লাভ করলেন সারা মুসলিম জাহানের প্রথম মুয়াজ্জিন হওয়ার গৌরব তিনি নবী করিম সাঃ এর প্রায় সমস্ত সাহাবাদের প্রিয়ভাজন ছিলেন নবীজিকে তুমি প্রানের চেও বেশি ভালোবেসেছেন এক সময় অসুস্থ হয়ে নবীজী সাঃ ইন্তেকাল করলেন সুখের রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু মদিনা ছেড়ে চলে যেতে চাইলেন কিন্তু খালিফা.।
বকর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর অনুরোধে মদিনায় থেকে গেলেও রাসুলুল্লাহ সাঃ এর মৃত্যুর পর যতদিন বেঁচে ছিলেন তার মুখে কোনো হাসি ছিল না বন্ধ করে দিলেন আযান দেয়া সিরিয়ার যুদ্ধের সময় সেখানে পাড়ি জমালেন বীরত্বের সাথে অংশ নিয়েছিলেন যে হাতে ভাগ্যের লীলাখেলা যে উনার হাতে বিলালকে দিনের-পর-দিন অকথ্য অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে সেই ওমরের মৃত্যু হল বেলাল রাদিয়াল্লাহু জ্বালানোর হাতেই সুমধুর কন্ঠের আযান শুনতে চাই কিন্তু তিনি রাজি হলেন না শেষমেশ খালিফার অনুরোধ রাখতে গিয়ে রাজি হলেন ঠিকই কিন্তু সম্পূর্ণ আযান শেষ করার সাথেই তিনি বেহুঁশ হয়ে গেলেন তারপর তারা আযান দেয়া একেবারেই বন্ধ হয়ে গেল যেখানে তার প্রাণের নবী নেই সেখানে তিনি কেমন করে আজান দেবেন ইউ আযান দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলে তিনি এর জবাবে বলতেন আমি যখন আজান দিব তখন আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার সময় ঠিক থাকতে পারলেও এরপর আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব.।
আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ বলার সময় মসজিদের মিম্বারের দিকে তাকালে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখব না তখন সহ্য করা আমার পক্ষে সম্ভব নয় তবু সাহাবীরা থেকে অনুরোধ করলো কিন্তু বেলাল রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু আগের মতোই নিশ্চল এবার সাহাবীরা অন্যায় খোপায় বের করল নবীজির দৌহিত্র হযরত হাসান রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এবং হযরত হাসান রাদিয়াল্লাহু ধরনের বিলাল কি আজান দিতে অনুরোধ করার জন্য আর তাদেরকে অনুরোধ ফেলতে পারলেন না এই ছিল তা সে শয়তান আর সেই আছেন তিনি শেষ করতে পারেননি আঁধারের মাঝে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান এরপর মদিনা ছেড়ে তিনি চলে গেলেন সিরিয়ায় রাসুলুল্লাহ সাঃ কে ছাড়া তার জীবন অসহনীয় হয়ে উঠেছিল একসময় চিরবিদায় এল দামেস্ক শহর নামক স্থানে 941 খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করলেন ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন হযরত বিলাল রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু তাকে দাফন করা হলো সালমানের গোরস্থানে.।
আল্লাহর রাস্তায় নিজের আদর্শের জন্য মরণ লড়াই করে যাওয়া সেই অকুতোভয় বীর সৈনিক আজ সেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন যতদিন এই আযানের ধ্বনি বাঁচবে ততদিন তিনি বেঁচে থাকবেন মানুষের অন্তরে । সবাই ভাল থাকবেন আল্লাহ হাফেজ.