Islamic Post

এক ফকির ও একজন বাদশার চমৎকার শিক্ষণীয় কাহিনী | True Islamic story Bangla

এক ফকির ও একজন বাদশার চমৎকার শিক্ষণীয় কাহিনী | True Islamic story Bangla

 

আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই । একজন ফকির ও একজন ৫৬০ চমৎকার শিক্ষনীয় কাহিনী ,প্রধান তিনটি চরিত্র একজন বাদশা একজন ফকির এবং একজন মসজিদের ইমাম বাদশা এবং ফকির যখন মসজিদের ভেতর বসে ছিলেন তখন ফকিরঃ আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলেন আমার মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমার কাছে গোশত এবং হালুয়া পাঠান আমার খুব খেতে ইচ্ছা করছে বাদশা এই কথা শুনে হাসতে লাগল এবং মনে মনে ভাবল ফকির তুই এই খাবারগুলো যদি আমার কাছে চাইতে তাহলে আমি হয়তো তোকে দিয়ে দিতাম কিন্তু তুই আল্লাহর কাছে চেয়েছি শালা তোকে এইসব জিনিস দিবে না এই ঘটনাটি মসজিদের ইমাম ও বসে বসে দেখছিলে.।

কিছুক্ষণ পর এক ব্যক্তি ওই ফকিরের কাছে আসলো এবং বলল এই নাও গরুর গোশত এবং হালুয়া এগুলো তুমি খেয়ে নাও চোখের সেই খাবারগুলো খাওয়ার পর বাকি অংশ ওই লোকটাকে দিয়ে দিলো তখন বাদশা ওই লোকটার কাছে গেল এবং বলল তোমার আল্লাহর কসম বল তুমি কিভাবে জানতে পারলে এই ব্যক্তি খাবারগুলো খেতে চাইছিল লোকটি তখন বাদশা কে বলল আজকে আমি কাজ করার পর অনেক টাকা পেয়েছি যার জন্য আমার স্ত্রীকে কিছু ভালো খাবার রান্না করতে বলেছিলাম আমি যখন একটু আগে ঘুমিয়ে ছিলাম তখন আমাকে স্বপ্নে কে যেন বললেন চাও তোমার ঘরের রান্নার খাবারগুলো মসজিদে থাকা ওই গরিব ব্যক্তিকে দিয়ে আসো আর তাই আমি তাড়াতাড়ি এসে এই খাবারগুলো তাকে দিলাম এবং আমি আল্লাহকে খুশি করলাম কেন না আজকের এই ভালো কাজের বিনিময়ে হয়তো আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমার জন্য কোন বরকত রেখেছেন আর এখানে এখন যে খাবারগুলো আছে এগুলো বাড়ি গিয়ে আমি এবং.।

আমার স্ত্রী মিলে খাব তখন এইবার সে বাচ্চাটাকে বললেন তুমি এই খাবার গুলো আমাকে দিয়ে দাও কেননা এই খাবারে হয়তো অনেক বরকত রয়েছে আর এই খাবারের বিনিময়ে আমি তোমাকে দুই দেরহাম দেব জবাবে ওই লোকটা বলল না আমি আপনাকে দেবোনা বাদশা বললেন আমি তোমাকে ১০ দিরহাম দেব লোকটি এবার ও বলল আমি আপনাকে তবুও খাবারগুলো দিব না আপনি যদি পৃথিবীর সকল টাকাপয়সা আমাকে এনে দেন তবুও আমি আপনাকে আমার এই বরকতময় খাবারের অংশগুলো দেবোনা প্রিয় বন্ধুগন আমরা এই ঘটনা থেকে বুঝতে পারলাম আল্লার উপর সবসময় বিশ্বাস করা উচিত আপনি যদি আল্লাহ সঠিক বান্দা হন তাহলে আপনার মনের ইচ্ছা গুলো সব সময় আল্লাহ নিজেই পূরণ করে দেবেন আপনি যদি ধনী ব্যক্তি হন এবং আপনার টাকার সদ্ব্যবহার না করেন মানুষের দুঃখ কষ্টে এগিয়ে না আসে তবে সেই টাকার ব্যবহার আল্লাহ রব্বুল আলামীন পছন্দ করেন না এবং আপনার প্রতি তাঁর অনুগ্রহের।

সম্পূর্ণরূপে সরিয়ে নেওয়া হয় আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমাদের সঠিক বুঝার তৌফিক দিন আমীন এবার আসছে পরবর্তী ঘটনায় এলাকায় একজন বুজুর্গ ব্যক্তি বসবাস করতেন তিনি ছিলেন অত্যন্ত দরবেশ প্রকৃতির একজন লোক তিনি বড় হেকমতের কথা বলতেন যেমন ছিল তার হেকমত তেমনি বড় মাপের বুজুর্গ ছিলেন তিনি তখন ছিল বাদশা হারুনুর রশিদ এর শাসনামল বাদশা কখনো কখনো ওই বুযুর্গের সঙ্গে ঠাট্টা বিদ্রুপ করতেন বাদশা হারুনুর রশিদ ঘোষণা করে রেখেছিলেন যদি কখনো আমার দরবারে আসতে চাই তার জন্য কোন প্রকার বাধা রাখবে না সে যেন সরাসরি আমার কাছে আসতে পারে এমনি একদিনের ঘটনা ওই বুজুর্গ হারুনুর রশিদ এর দরবারে উপস্থিত হলেন হারুনুর রশীদ এমনিতেই মজা করতেন তও বাদশার কাছে একটা চাকু ছিল চাকরটা তিনি বুযুর্গের হাতে দিয়ে বললেন ভাই এই চাকুটা আমি তোমার কাছে আমানত স্বরূপ রাখছে এই পৃথিবীতে.।

কাউকে যদি তোমার চেয়ে অধিক বোকা মনে হয় তাহলে তাকে আমার পক্ষ থেকে এই চাকুটা উপহারস্বরূপ দিয়ে দেবে এর দ্বারা বাদশা বলার উদ্দেশ্য ছিল এই যে তোমার চেয়ে অধিক বোকা দ্বিতীয়জন আর নেই বুজুর্গ ওই চাকুটা হাতে নিয়ে নিজের কাছে রেখে দিলেন আসা যাওয়ার মাঝে এভাবে সময় গড়াতে থাকলেও দিন যায় সপ্তাহ যায় মাস যায় বছর ঘটনাক্রমে একদিন হারুনুর রশিদ বিছানাগত হয়ে পড়লেন এমন দুর্বল অবস্থা যে বিছানা থেকে উঠতে পর্যন্ত তিনি অবাক হয়ে গেলেন ডাক্তার তাকে কোন প্রকার হাঁটাচলা করতে নিষেধ করেছেন তার খবরা খবর নেওয়ার জন্য ওই বুজুর্গ ব্যক্তি হারুনুর রশিদ এর দরবারে উপস্থিত হলেন জিজ্ঞাসা করলেন আমিরুল মুমিনিন কি অবস্থা আপনার বাসা বললেন আমার অবস্থা কি আর শুনবে দীর্ঘ এক সফরের সম্মুখীন হয়েছে বুজুর্গ বলেন কোন জায়গা সফর আমীরুল মুমিনীন তিনি বলেন আখিরাতের সফর অতঃপর বুজুর্গ।

বিশ্বাস করলেন তো ওইখানে সৈনিক কতজন পাঠিয়েছেন ওইখানে নিরাপত্তাব্যবস্থা কেমন কয়টি তাবু ফেলা হয়েছে হারুনুর রশীদ বলেন এমন কী আশ্চর্য ধরনের কথা বলছ আখিরাতের সফল হল এমন এক সফর যেখানে সঙ্গী-সাথী সৈন্য-সামন্ত লোকলস্কর কিছু সঙ্গে নেওয়া যায় না অতঃপর বুজুর্গ বললেন আচ্ছা জনাব তাহলে ওখান থেকে ফেরা হচ্ছে কবে বাদশা কিছুটা রাগান্বিত হয়ে বললেন আবারো তুমি বোকার মতো কথা বলছো এটা হচ্ছে আখেরাতের সফর এখান থেকে কেউ কখনো ফিরে আসতে পারেনা বুজুর্গ বললেন এক লম্বা সফর যে কেউ কখনো ফিরে আসেনা আর আগে কেউ যেতে পারে না বাচ্চা বলে এটা এমনি এক সফর অতঃপর বুজুর্গ বললেন আমিরুল মুমিনিন দীর্ঘদিন ধরে আপনার একটি আমানত আমার নিকট রক্ষিত আছে আপনি আমাকে এই কথা বলে দিয়েছিলেন যে কখনো যদি আমার চেয়ে বোকা কাউকে পাই তাহলে তা যেন আমি তাকেই দিয়ে দেই আজ আপনাকে।

ছাড়া এই চাকর যোগ্য আর কাউকে দেখছি না এর কারণ হলো আমি সর্বদা দেখে আসছি যে আপনি যদি সাধারন কোন সফরের ইচ্ছা করেন যেখান থেকে আপনি বেশ দ্রুত ফিরে আসবেন তখন দেখেছি পূর্ব থেকেই অনেক সৈনিক ওপ্রহরি পাঠিয়ে দিতেন তারা আপনার নিরাপত্তাসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু তৈরি করে রাখে অথচ আপনি এত লম্বা সফরে যাচ্ছেন যেখান থেকে কখনো ফিরে আসা সম্ভব নয় আর কোনো রকম প্রস্তুতি আপনার কাছে নেই সুতরাং আমার চেয়ে অধিক বোকা হিসেবে আপনাকে পেলাম এই চাকু আপনার কাছে মোবারক হোক অতঃপর বুযুর্গের কথা শুনে হারুন-অর-রশিদ কেঁদে ফেললেন এবং বললেন আল্লাহর প্রিয় বান্দা আমি তোমাকে পাগল ও বোকা মনে করতাম কিন্তু আজ বুঝতে পারলাম তোমার চেয়ে অধিক বুদ্ধিমান এবং গিয়ানি আর কেউই নেই আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমাদের আখেরাতের সফরের জন্য সঠিক বুঝি আহরণ করার তৌফিক দিন আমীন এবার আসছে আরেকটি সুন্দর শিক্ষণীয় ঘটনায় আবার।

বাদশা হারুনুর রশিদের একটি ঘটনা বাদশা হারুনুর রশিদ এর দরবারে বসেছিলেন খাদেমকে এক গ্লাস পানি দিতে বললেন রাজদরবারের একপাশে বসে পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করছেন একজন বুজুর্গ ব্যক্তি যখন বাদশা পানি পান করতে যাবেন এমন সময় সেই বুজুর্গ হারুন-অর-রশীদকে বললেন হে আমীরুল মুমিনীন এক মিনিটের জন্য অপেক্ষা করুন হারুনুর রশীদ বলেন কি ব্যাপার অতঃপর বুজুর্গ ব্যক্তি বললেন আমিরুল মুমিনিন আমি আপনাকে একটি প্রশ্ন করতে চাই প্রশ্নটা হল আপনার তো এখন পিপাসা লেগেছে আর পানির গ্লাস আপনার হাতেই রয়েছে আচ্ছা বলুন তো যদি এমন হয় যে আপনি মরুভূমিতে আছেন আর আপনার খুবই পিপাসা লেগেছে অথচ আপনার কাছে কোনো পানি নেই আর আপনার পিপাসা ধীরে ধীরে বেড়ে চলেছে তাহলে এক গ্লাস পানির জন্য আপনি কত টাকা খরচ করতে পারবেন হারুনুর রশীদ বলেন এমন যদি হয় যে প্রচন্ড পিপাসা লেগেছে আর দুনিয়াজুড়ে কোথাও পানি নেই।

তবে তা নিশ্চিত ওফাতের দিকে আমাকে নিয়ে যাবে তখন আমি আমার প্রাণ বাঁচাতে আমার কাছে যত সম্পদ রয়েছে তা দিয়ে হলেও জান বাঁচানোর চেষ্টা করব এই উত্তর শুনে উনি বুজুর্গ ব্যক্তি পড়লেন ঠিক আছে বিসমিল্লাহ বলে পানি পান করে নিন বাদশা পানি পান করে নিলেন এবার বুজুর্গ ব্যক্তি বললেন আমিরুল মুমিনিন আমি আপনাকে আরেকটা প্রশ্ন করতে চাই বাদশা বললেন বড় প্রশ্ন তোমার বুজুর্গ বললেন আপনি এইমাত্র যে পানিটুকু পান করেছেন এই পানিটুকু যদি আপনার ভেতরে থেকে যায় বের করার কোন পথ অবশিষ্ট না থাকে আর প্রাকৃতিক কর্মের চাপ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে কিন্তু তা নিষ্কাশনের কোন উপায় নেই তবে এই সমস্যা সমাধানের জন্য আপনি কত টাকা ব্যয় করতে পারবেন বাদশা বলেন বিজুরি প্রাকৃতিক কর্মের বে থাকা সত্ত্বেও তারা নিষ্কাশন করতে না পারি আর যন্ত্রণা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে তাহলে এই অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্য আমার কাছে যত।

থাক না কেন তা দিয়ে চিকিৎসা করাব এমনকি এই চিকিৎসার বিনিময়ে যদি আমার গোটা রাজত্ব দাবি করা হয় তাহলে আমি এই চিকিৎসা করাব অতঃপর বুজুর্গ বললেন আমিরুল মুমিনিন আমি এই দ্বারা এটাই বুঝাতে চেয়েছি যে আপনার এত বড় বাজ পাখির দাম এক গ্লাস পানি পান করার যে মূল্য তার সমান নয় অথচ আল্লাহ এসব কিছুই আপনাকে বিনামূল্যেই দান করেছেন এই গানের জন্য শুকরিয়া করা আমাদের সকলের কর্তব্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের এই সুন্দর শিক্ষণীয় ঘটনা গুলো থেকে সঠিক শিক্ষা গ্রহণের তৌফিক দিন আমীন এই ঘটনা গুলোর মধ্যে কোন ঘটনাটি সবচেয়ে বেশি পছন্দ হয়েছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এমন শিক্ষণীয় ও জ্ঞাননির্ভর ইসলামিক ঘটনা নিয়ে নিয়মিত মুসলিম হবো ইনশাআল্লাহ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button