Islamic Post

মেরাজের রাতে মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে কি ঘটেছিল ?

মেরাজের রাতে মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে কি ঘটেছিল ?

মেরাজের রাতে মহানবী সাঃ এর সঙ্গে যা ঘটেছিল বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবনের সকল অলৌকিক ঘটনা ঘটেছিল তার মধ্যে মিরাজের ঘটনা অন্যতম মহানবী সাঃ সাহাবীদের কাছে এই ভাবে বর্ণনা করেন একদিন রাত্রিবেলা আমি হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা ঘরে নিভৃতে সামনে ছিলাম আমি তখন তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় ছিলাম এমন সময় হঠাৎ এক আগন্তুক ব্যক্তি ঘরের ছাদ ফাঁক করে আমার কাছে এলেন সঙ্গে ছিলেন আরো কয়েকজন ফেরেশতা আর তিনি ছিলেন জিব্রাইল আলাই সাল্লাম তারপর তিনি আমার বুকের উপর থেকে তলপেট পর্যন্ত চিরে আমার দিন তাকে বের করে ফেললেন আমার দিলটা কে পবিত্র জমজম পানি দিয়ে ধুয়ে আমার বক্ষ ঠিকঠাক করে দেয়া হলো এরপর বরাত নামের স্বর্গীয় বাহোমে চেপে ঊর্ধ্বাকাশে গমন করেন এটা গাধা থেকে একটু বড় এবং খচ্চর থেকে একটু ছোট এবং সে ধরনের বুখারী জিব্রাইল আলাই সাল্লাম রাসূলকে পরিচয়.।

বিয়ে দেন এটা তুর পর্বত এখানে আল্লাহ পাক হযরত মুসা আলাই সাল্লাম এর সঙ্গে কথা বলেছিলেন এখানেই মুসা আলাই সাল্লাম নবুওয়াত লাভ করেন প্রথম সেখানে অবতরণ করে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন এইভাবে আবার দ্রুত গতিতে চলছে বরাক তুমি ঈসা আলাই সালাম এর জন্মস্থান বায়তুল্লাহ ফিলিস্তিনে উপস্থিত হন জিব্রাইল আলাই সাল্লাম নবীকে পরিচয় করিয়ে দিলেন ঈসা আলাই সালাম এর জন্মস্থান এর সঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাঃ সেখানে আরও দুই রাকাত নামাজ আদায় করলেন এইভাবে বিভিন্ন পয়গম্বর এর স্মৃতি বিজড়িত স্থান সমূহ অতিক্রম করে করে বায়তুল মোকাদ্দাসে পৌঁছে মসজিদে দুই রাকাত নামাজ পড়েন এবং তিনি নামাজের ইমামতি করেন বায়তুল মোকাদ্দাসে ইমামতির পর জিব্রাইল আলাই সাল্লাম কে নিয়ে বোরাকের মাধ্যমে ঊর্ধ্বাকাশে যাত্রা শুরু হয় মুহূর্তের মধ্যে প্রথম আসমানের প্রবেশ দ্বারে এসে তারা উপস্থিত হন প্রথম আসমানে এসে জিব্রাইল আলাই সালাম দরজা খুলে দিতে বললেন তখন জিজ্ঞাসা করা হল কে আপনি.।

তিনি বললেন আমি জিব্রাইল আলাই সাল্লাম আমার জিজ্ঞাসা করা হল আপনার সঙ্গীকে তিনি বললেন মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ আবার জিজ্ঞাসা করা হলো তাকে কি ডেকে পাঠানো হয়েছে তিনি বললেন তখন বলা হলো মারহাবা উত্তম আগমনকারীর আগমন হয়েছে তারপর আসমানের দরজা খুলে দেয়া হলো আমি যখন প্রথম আসমানে পৌছালাম তখন সেখানে আদম আলাই সালাম এর দেখা পেলাম জিব্রাইল আলাই সাল্লাম তখন আমাকে বললেন ইনি আপনার আদি পিতা আদম আলাই সাল্লাম তাকে সালাম কর আমি তাকে সালাম করলাম তিনি সালামের জবাব দিলেন এবং বললেন নেককার পুত্র নেকার নবীর প্রতি খোশ আমদেদ এইভাবে দ্বিতীয় আসমানে হযরত ঈসা আলাই সাল্লাম এবং হযরত ইয়াহিয়া আলাই সাল্লাম এবং তৃতীয় আকাশে হযরত ইউসুফ আলাই সাল্লাম চতুর্থ আকাশে হযরত ইদ্রিস আলাই সাল্লাম পঞ্চম আকাশে হযরত হারুন আলাই সাল্লাম ষষ্ঠ আকাশে.।

মুসা আলাই সাল্লাম এবং সপ্তম আসমানে হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম এর সঙ্গে মহানবী সাঃ এর সাক্ষাৎ হলো এবং তারা পরস্পর শুভেচ্ছা বিনিময় করেন নবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সালাম বিনিময় করেন এইভাবে সাত আসমানে অবস্থানকারী নবীদের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করে সালাম বিনিময় করেন এই সফরে বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও অনেক কিছু নেই চোখে দেখেছেন এমন একজন লোকের পাশ দিয়ে গমন করেছিলেন তাদের লোক ছিল তা আমার এই নবধারা তারা স্বীয় মুখমন্ডল লক্ষ্যমাত্রা ছিল এদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে জিব্রাইল নবীকে জানালেন 82 লোক যারা দুনিয়াতে মানুষের গোশত ভক্ষণ করত অর্থাৎ একে অপরের গীবত এবং মানহানিকর মুসনাদে আহমাদ নবীজির জান্নাতে প্রবেশ করে এক পাশে একটি হালকা আওয়াজ শুনতে পেলেন তিনি জিজ্ঞাসা করলেন এটা কিসের আওয়াজ জিবরাঈল বললেন মহাসিন বেলালের কন্ঠে নবীজির সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম সাহাবায়ে কেরামের উদ্দেশ্যে বলে.।

বিরল সাফল্য অর্জন করেছে মুসনাদে আহমাদ সপ্তম আসমানে পর রাসুলুল্লাহ সাঃ সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত পৌঁছায় তখন রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন ঊর্ধ্ব গমন করেন এমনকি আল্লাহর মাহফুজের কলম চালানোর আওয়াজ শুনতে পান তখন জিব্রাইল আলাই সাল্লাম বলেন আমার যাত্রাপথ এখানেই শেষ এরপর আপনার সঙ্গ দেয়ার সাধ্য আমার নেই আর সামনের দিকে যেতে পারবে না যদি এক পাও গ্রহণ হয় তবে আল্লাহ তাআলার নুরের তালতলীতে সব পড়ে যাবে এখান থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একাই সামনের দিকে অগ্রসর হতে অনুরোধ জানালেন সেখান থেকে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম তিনি একাই রফ রফ নামের এক বাহিনীর মাধ্যমে মহান আল্লাহর আরশে উপস্থিত হলেন উল্লেখ্য যে রাফ রাফ নামে যানবাহনটি বোরাকের চেয়ে অধিক দ্রুতগামী দ্রুতবেগে ৭০০০০ ঘরের পর্দা পেরিয়ে আল্লাহর দরবারে হাজির হলেন অতএব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম.।

আল্লাহর এত কাছে চলে যান যে আল্লাহ পাক তার বন্ধুকে নিব ঈর্ষান্বিত দান করেন এবং এখানেই আল্লাহর দেখা লাভ করেন একটি পর্দার আড়াল টেনে আল্লাহ তারা দূর্দর্ষণ করেন তার হাবিব মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তিনিই একমাত্র মহামানব যিনি সফরের মাধ্যমে আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্যে যান সেখানে রাসুলুল্লাহ সাঃ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সঙ্গে একান্ত আলাপ এর সৌভাগ্য অর্জন করেন মিলাদের শেষে ফিরে আসার সময় আবার দেখা হবে মুসা আলাই সাল্লাম এর সঙ্গে মুসা আলাই সালাম জিজ্ঞাসা করলেন আল্লাহতালা আপনি কি কি আদেশ করেছেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন আমাকে দৈনিক ৫০ ওয়াক্ত নামাজের আদেশ দেয়া হয়েছে তিনি বললেন আপনার উম্মত দৈনিক ৫০ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে সমর্থ হবে না আল্লাহর কসম আমি আপনার আগের লোকদের পরীক্ষা করেছি এবং বনি ইসরাইলের হেদায়েতের জন্য কঠোর শ্রম দিয়েছে তাই আপনি আপনার প্রতিপালকের কাছে ফিরে যান এবং.।

আপনার উম্মতের বোঝা হালকা করার জন্য আরজ করুন আমি ফিরে গেলাম তাহলে আমার উপর হতে ১০ ওয়াক্ত নামাজ কমানো হল আমি আমার মুসা আলাই সাল্লাম এর কাছে ফিরে এলাম তিনি আবার আগের মতো বললেন এভাবে করতে করতে মহানবী সাঃ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে নিয়ে আসলেন কিন্তু তাতেও মুসা আলাই সাল্লাম বললেন আপনার উম্মত দৈনিক পাঁচবার নামাজ আদায় করতে অসমর্থ হবেনা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন আমি আমার রবের কাছে অনেকবার গিয়েছি এখন আবার যেতে লজ্জা বোধ করছি মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ ১৬২ অবশেষে মিরাজ শেষ করে চলে এলেন পৃথিবীতে এসে দেখলেন ওযুর পানি তখনও গড়িয়ে যাচ্ছে দরজায় করতে পৃথিবীর সময় এবং কাজকর্ম সবকিছু বন্ধ করে দিয়েছিলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার কারণে এই অবস্থা হয়েছে শবে মিরাজের সকালবেলা নবীজী সাঃ চিন্তিত মন নিয়ে বসে আছেন মনে মনে ভাবছেন.।

রত্রি সংঘটিত মিরাজের ঘটনার কথা প্রকাশ করলে মানুষ আমাকে মিথ্যুক বলে অভিহিত করবেনা তো ইতিমধ্যেই কাছে দিয়ে যাচ্ছিল আবু জেহেল নবীজির কাছে বসে বিদ্রুপের ছলে বললেন কোন ব্যাপার আছে নাকি নবীজী বললেন হ্যাঁ সেই আবার কি তিনি জবাব দিলেন আজ রাতে আমার মেরাজ হয়েছে সে বিষয়ের সঙ্গে জানতে চাইলেও কতদূর পর্যন্ত যাওয়া হয়েছিল নবীজী বললেন বাইতুল মাকদিস পর্যন্ত সে আবারও ঠাট্টা করে উঠল চমৎকার তো এরপর সকালে তুমি আমাদের কাছে চলে গেলে তিনি দৃঢ়ভাবে বললেন এরপর আবু জাহেল কথা না বাড়িয়ে তাকে বলল আচ্ছা আমি যদি পুরো কুরাইশদেরকে ডেকে নিয়ে আসি তাহলে কি তুমি একই কথা বলতে পারবে নবীজি আবারও সুদৃঢ় ও কণ্ঠে বললেন অবশ্যই আবুজেহেলের নাম গোত্রের নাম ধরে ডাকতে লাগল আর তারাও দলাদলি খানায়ে কা’বা সমবেত হতে লাগলো সকলেই উপস্থিত হলে আবু জাহেল.।

আমাকে যা কিছু তুমি শুনিয়েছিলে পারলে তাই এদেরকে ব্যক্ত করো নবীজির পুনরায় একই ঘটনা তাদের সম্মুখে ব্যক্ত করলে কিছু লোক বিষয় হাতের উপর হাত রাখল আবার অনেকেই হতবাক হয়ে মাথায় হাত দিলো তিরমিজি একসময় মক্কার কোন পথ ধরে হেটে যাচ্ছিলেন হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা মক্কার কাফেররা থাকে এই ঘটনার কথা শুনিয়ে বলল তুমি কি তবুও তাকে বিশ্বাস করবে হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর হৃদয়ে ঈমানের বহু শিখা জ্বলে উঠল তিনি এক আকাশ আস্থা নিয়ে সুদৃঢ় ও কন্ঠে বলে উঠলেন আমিতো এরচেয়ে আরো দূরের অনেক জটিল বিষয়ে তাকে বিশ্বাস করি যখন মহানবী সাঃ এর সেই মেরাজের ঘটনা বর্ণনা করলেন তখন হযরত আবু বক্কর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু কোন প্রশ্ন এবং যুক্তি-তর্ক ছাড়াই বিশ্বাস করে নিলেন আর এই কারণে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু কে সিদ্দিক বা বিশ্বাসী উপাধিতে ভূষিত করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button